ফ্ল্যাশ ইন। দৃশ্য-০৫। দিন। সবুজের বেড। (এলোমেলো বেডে দু‘জন দু‘দিকে পড়ে থাকে। প্রথম ডাক্তার জ্ঞান ফিরে পায়। প্রচন্ড ভয়ে সবুজের গায়ে হাত দিয়ে ডাকাডাকি করে। তীব্র ঘোংড়ানি দিয়ে সবুজের জ্ঞান ফিরে আসে।) ডাক্তারঃ এই, এই সবুজ! আপনার কি হয়েছে? কে এসেছিল? আপনি কি তাকে চিনেন? সবুজঃ (নিজেকে নিজেই বিড় বিড় করে প্রশ্ন করে) আমি----আমি কি তাকে চিনি? (চিৎকার করে) না আমি তাকে চিনি না। আমি তাকে চিনতেও চাই না। সে আমার রক্ত খেতে চায়। সে একজন রক্ত পিপাসু। ডাক্তারঃ কেন সে আপনার রক্ত খেতে চায়? কে সে? সবুজঃ আমি জানি না। আমি জানতেও চাই না। আমি আমার হারিয়ে যাওয়া অতীতকে ভুলে যেতে চাই। ডাক্তারঃ কি হয়েছে আপনার অতীতে? কেন আপনি আপনার অতীতকে ভুলে যেতে চান? আমাকে সবকিছু খুলে বলুন। সবুজঃ সাথী, সাথী! সাথী!!!!!!!!!! ডাক্তারঃ কি করেছে সাথী, সাথী কে? সবুজঃ সাথীকে আমি ভালবাসতাম। এই হসপিটালের (সাদা কাপড় বিছানো একটা খালি বেডকে উদ্দেশ্য করে) ঐ বেডে সাথী মারা গেছে। ডাক্তারঃ (আগ্রহ নিয়ে) তারপর? সবুজঃ তারপর থেকে সাথী আমাকে তার কাছে নিয়ে যেতে চায়। সে আমাকে সব সময় হাতছানি দিয়ে ডাকে। ডাক্তারঃ মূল ঘটনাটা কি? ডিটেইলস বলুন। সবুজঃ শুনবেন? তাহলে শুনুন। আজ থেকে দু‘ বৎছর পূর্বে আমি এবং সাথী এক সাথে মটর সাইকেল এক্সিডেন্ট করি। আমি---আমি সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যাই কিন' সাথী মারা যায়। সাথী মারা যাওয়ার পর থেকে প্রেতাত্মা হয়ে আমাকে ডিস্টার্ব করে। ডাক্তারঃ কি রকম ডিস্টার্ব করে? সবুজঃ প্রেতাত্মা হয়ে সে আমাকে ভালবেসে কাছে পেতে চায়। আমাকে তার কাছে উঠিয়ে নিয়ে যেতে চায়। ডাক্তারঃ প্রেতাত্মা হয়ে, আপনাকে উঠিয়ে নিয়ে যেতে চায়। এসবের মানে কি? আচ্ছা, সাথী কোন সালের কোন তারিখে মারা গেছে তা আপনার সঠিক মনে আছে? সবুজঃ না, আমার মনে নেই, আমার কিছুই মনে থাকে না, মনে করতেও চাই না। আমি এখন ঘুমোবো। (সবুজ অসি'র হয়ে বেডে শুয়ে পড়ে। ডাক্তার অপলক চোখে সবুজের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে।) দৃশ্য-০৬। রাত। হসপিটালের অফিস রুম। (ডাক্তার আইরিন আলমারী হতে মৃত্যু সংক্রান্ত ফাইল-পত্র ঘেটে সাথীর ডেথ সার্টিফিকেট বের করে। এ সময় পুনরায় ছায়ামূর্তি আর্বিভূত হয়।) ছায়ামূর্তিঃ (ডাক্তার আইরিনের পিছনে দাঁড়িয়ে) তুই আমার মৃত্যুর ইতিহাস জানতে চাস। আমার সবুজকে আমার কাছ থেকে দূরে রাখতে চাস। (অট্টহাসি দিয়ে)। হা--হা--হি--হি আমি তোকে ছাড়ব না। আমি তোকে ছাড়ব না। আমার পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ালে আমি তোর রক্তও খাব। আমি রক্ত পিপাসু হা--হা--হি--হি---- (মিলিয়ে যায়। ডাক্তার অজ্ঞান হয়ে যায় তীব্র বাতাসে কাগজ-পত্রগুলো মেঝেতে এলোমেলো হয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকে)। দৃশ্য-০৭। রাত। সবুজের বেড। (সবুজ সাথীর একটা ছবি হাতে নিয়ে একা একা কথা বলে। এই সময় নার্স শিরিন আসে, সবুজকে ঔষধ খাওয়ার জন্য তাগাদা দেয়।) সবুজঃ তুমি আমাকে কোথায় নিয়ে যেতে চাও? আমি তোমার কি ক্ষতি করেছি? প্লিজ আমাকে আমার মত থাকতে দাও। আমি তোমাকে ভয় পাই। প্রচন্ড রকম ভয় পাই------------। নার্সঃ (নার্স প্রবেশ করে) আপনি ঔষধ খেয়েছেন। সবুজঃ আমার কি হয়েছে? আমি ঔষধ খাব কেন? নার্সঃ (ঔষধ হাতে নিয়ে) আপনার কিছুই হয় নি, প্লিজ ঔষধ খান তো। সবুজঃ আমি আপনার হাতে ঔষধ খাব না। ডাক্তার আপুর হাতে ঔষধ খাব। প্লিজ ডাক্তার আপুকে একটু ডাকুন। নার্সঃ আমার হাতে ঔষধ খাবেন না কেন? আমি কি আপনাকে বিষ খাওয়াবো? সবুজঃ বলছি তো আপনার হাতে ঔষধ খাব না। (নার্স বিরক্ত হয়ে চলে যায়। সবুজ ছবি হাতে নিয়ে অনবরত কথা বলতে থাকে) চলবে----
নাজমুল কবির
নিভৃতচারি কবি যিনি তাঁর মসির আঁচড়ে সামাজিক অবক্ষয়ের বাস্তব চিত্র অঙ্কন করে পাঠক সমাজে বেশ সমাদৃত হয়েছেন। কবি নাজমুল কবির প্রকৃত পক্ষে পহেলা জানুয়ারী উনিশশত ষাট সালে নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম থানার বড়াইগ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। নিষ্ঠুর দারিদ্রতাকে জয় করে তিনি দেখিয়েছেন নিজের দৃঢ় আত্ম-প্রত্যয়ের দুঃসহ যন্ত্রনা। তিনি ছোট বেলা থেকেই লেখালেখি পছন্দ করতেন এবং কাপাসিয়া পাইলট হাই স্কুলে অধ্যয়নরত থাকাকালীন সময়েই লেখায় হাতে খড়ি। কাপাসিয়া পাইলট হাই স্কুল হতে এস. এস. সি. এবং কাপাসিয়া কলেজ থেকে এইচ. এস. সি. কৃতিত্বের সহিত পাশ করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। ঢাকায় চাকুরীরত থাকাকালীন অবস্থায় তাঁর লেখা কবিতা সেনাবাহিনী কর্তৃক প্রকাশিত সেনাবার্তায় প্রকাশিত হয় এবং ঐ সময়েই সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা পরিদপ্তর ও আই.এস.পি. এর অনুমতিক্রমে বাংলাদেশ বেতার ও টিভির তালিকাভূক্ত গীতিকার হন। তাঁর লেখা গান রেডিও ও টিভিতে নব্বই এর দশকে প্রচারিত হয়েছে। তিনি একাধারে একজন সাহিত্যিক ও অপরদিকে গাজীপুর২৪ডমকম প্রত্রিকার সম্পাদক এবং দৈনিক অপরাধ তথ্য পত্রিকার গাজীপুর জেলার ব্যুরো প্রধান। নবীন কবিদের প্রতি অগাধ ভালোবাসা যার নিত্য দিনের সঙ্গী। প্রকাশিত গ্রন্থসমূহঃ (১) হৃদয়ের মাঝখানে দেয়াল (২) এক বিন্দুতে ভালোবাসা (৩) নির্ঝর ভালোবাসা (৪) কবিতার কারুকাজ (৫) প্রম আসেনি (৬) ভুতের বাসা (৭) মেঘ বালিকার স্বপ্ন (৮) হোমিও মতে চিকিৎসা, হোমিও চিকিৎসা বিষয়ক বই (৯) দ্রোহের অগ্নি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। এ বারের বইমেলায় যৌথ কাব্যগ্রন্থ আলোর বিকাশসহ ৬ টি যৌথ কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ তাঁর নিজস্ব শৈলী মাধুর্যতার পরিচয় মেলে। এবার বইমেলায় প্রকাশিত হবে 'শূন্য জীবন পুণ্যে ভরো' একক কাব্যগ্রন্থ।
নাজমুল কবির এর সর্বশেষ লেখা
6 মন্তব্য
- মন্তব্যের লিঙ্ক রবিবার, 14 জানুয়ারী 2024 09:05 লিখেছেন Unrella
Study Years of enrollment Evidence Chan et al propecia otc
- মন্তব্যের লিঙ্ক রবিবার, 09 জুলাই 2023 14:30 লিখেছেন dTuxsIUn
Mayo clinic visits or so much longer recommended cheap propecia online uk When you start a new prescription or over the counter medication, make sure you understand how to take it correctly
- মন্তব্যের লিঙ্ক বৃহষ্পতিবার, 14 মে 2015 22:43 লিখেছেন মোঃ আবু সাইদ সরকার
অসাধারণ লিখন।
- মন্তব্যের লিঙ্ক বুধবার, 13 মে 2015 23:47 লিখেছেন আনামিয়া
চলুক । পরে কিছু বলব ।
- মন্তব্যের লিঙ্ক বুধবার, 13 মে 2015 14:23 লিখেছেন হুমায়ুন আবিদ
ভাল লাগলো দাদা ভাই
- মন্তব্যের লিঙ্ক বুধবার, 13 মে 2015 11:51 লিখেছেন মোঃ খোরশেদ আলম
অসাধারণ কাহিনী দাদু ভাই , শুভ কামনা আপনার তরে
মন্তব্য করুন
Make sure you enter all the required information, indicated by an asterisk (*). HTML code is not allowed.