কখনো হঠাৎ মনে হয়ঃ আমি এক আগ্নেয় পাহাড়। শান্তির ছায়া-নিবিড় গুহায় নিদ্রিত সিংহের মতো চোখে আমার বহু দিনের তন্দ্রা। এক বিস্ফোরণ থেকে আর এক বিস্ফোরণের মাঝখানে আমাকে তোমরা বিদ্রূপে বিদ্ধ করেছ বারংবার আমি পাথরঃ আমি তা সহ্য করেছি। মুখে আমার মৃদু হাসি, বুকে আমার পুঞ্জীভূত ফুটন্ত লাভা। সিংহের মতো আধ-বোজা চোখে আমি কেবলি দেখছিঃ মিথ্যার ভিতে কল্পনার মশলায় গড়া তোমাদের শহর, আমাকে ঘিরে রচিত উৎসবের নির্বোধ অমরাবতী, বিদ্রূপের হাসি আর বিদ্বেষের আতস-বাজি– তোমাদের নগরে মদমত্ত পূর্ণিমা। দেখ, দেখঃ ছায়াঘন, অরণ্য-নিবিড় আমাকে দেখ; দেখ আমার নিরুদ্বিগ্ন বন্যতা। তোমাদের শহর আমাকে বিদ্রূপ করুক, কুঠারে কুঠারে আমার ধৈর্যকে করুক আহত, কিছুতেই বিশ্বাস ক’রো না– আমি ভিসুভিয়স-ফুজিয়ামার সহোদর। তোমাদের কাছে অজ্ঞাত থাক ভেতরে ভেতরে মোচড় দিয়ে ওঠা আমার অগ্ন্যুদ্গার, অরণ্যে ঢাকা অন্তর্নিহিত উত্তাপের জ্বালা। তোমার আকাশে ফ্যাকাশে প্রেত আলো, বুনো পাহাড়ে মৃদু-ধোঁয়ার অবগুণ্ঠন: ও কিছু নয়, হয়তো নতুন এক মেঘদূত। উৎসব কর, উৎসব কর– ভুলে যাও পেছনে আছে এক আগ্নেয় পাহাড়, ভিসুভিয়স-ফুজিয়ামার জাগ্রত বংশধর। আর, আমার দিন-পি কায় আসন্ন হোক বিস্ফোরণের চরম, পবিত্র তিথি।।